সত্যক সারণী (Truth Table)
যে সারণীর মাধ্যমে বুলিয়ান বীজগাণিতের বিভিন্ন ইনপুটের মানগুলোর সম্ভাব্য আউটপুট মান দেখানো যায় তাকে সত্যক সারণী বা Truth Table বলে।
সত্যক সারণীর ব্যবহার :
- বুলিয়ান উপপাদ্য প্রমাণ করার জন্য সত্যক সারণী ব্যবহার করা হয়।
- সরলীকরণ সঠিক কিনা তা পরীক্ষা করতে সত্যক সারণী ব্যবহার করা হয়।
- একটি রাশি সরলীকরণ করে নতুন একটি রাশিতে রুপান্তর করতে ব্যবহৃত হয়।
- সার্কিটের আউটপুট কেমন হবে তা ঠিক করে সেখান থেকে বুলিয়ান রাশি বের করে ইলেকট্রনিক্স সার্কিট তৈরি করতে ব্যবহৃত হয়।
লজিক ফাংশন থেকে সত্যক সারণী তৈরি :
- ধাপ-০১ : প্রদত্ত সমীকরণটিতে ব্যবহৃত মোট চলক সংখ্যা নির্ণয় করতে হবে। যেমন- F=A+BC সমীকরণটিতে A,B,C মোট তিনটি চলক আছে।
- ধাপ-০২: চলকগুলি পাশাপাশি বসিয়ে প্রেত্যেকটির জন্য আলাদা আলাদা কলাম তৈরি করতে হবে।
- ধাপ-০৩: সাব মান ও মান নির্ণয়ের জন্য অতিরিক্ত কলাম তৈরি করতে হবে। এক্ষেত্রে পর্যায়ক্রমে সিঙ্গেল নট অপারেশন, প্রথম বন্ধনী, গুন ও যোগের কাজ করে সম্পূর্ণ মান তৈরি করতে হবে।
- ধাপ-০৪: সারণীটি সম্পূর্ণ করার জন্য n সংখ্যক চলকের জন্য সত্যক সারণীতে 2n সংখ্যক সারি (কলাম হেডিং ছাড়া) তৈরি করতে হবে। যেমন-F=A+BC সমীকরণটিতে তিনটি চলক আছে তাই 23=8 টি সারি তৈরি করতে হবে।
- ধাপ-০৫: এরপর সারণীটি নির্ধারিত নিয়মে পূরণ করলেই সত্যক সারণীটি তৈরি হয়ে যাবে।
Note : সারণটি পূরনের ক্ষেত্রে ডানের ইনপুটে একটা 0 একটা 1 এভাবে, তার বামের টাই দুইটা 0 দুইটা 1 এভাবে, তার বামের টাই চারটা 0 চারটা 1 এভাবে যত বামে যাবো 0,1 ডাবল হবে। বাকি কলামগুলোতে পূরক,গুন ও যোগ ঠিকমতো করতে হবে।
সত্যক সারণি থেকে বুলিয়ান সমীকরণ বের করার পদ্ধতি :
সত্যক সারণীর বুলিয়ান সমীকরণ দুইভাবে বের করা যায়।
- মিনটার্ম এর সাহায্যে
- ম্যাক্সটার্ম এর সাহায্যে
মিনটার্মের সাহায্যে বুলিয়ান সমীকরণ নির্ণয় :
মিনটার্ম: সত্যক সারণীতে ব্যবহৃত ইনপুট বিন্যাসসমূহের গুণফলকে মিনটার্ম বলে। পতিটি মিনটার্মের মান 1 হয়। সত্যক সারণীর যেসব মিনটার্মের মান 1, সেই মিনটার্মসমূহ যোগ করে বুলিয়ান ফাংশন/সমীকরণ নির্ণয় করা হয়। এ পদ্ধতিকে SOP(Sum of Products) বলা হয়।
ম্যাক্সটার্ম এর সাহায্যে বুলিয়ান সমীকরণ নির্ণয় :
ম্যাক্সটার্ম : সত্যক সারণীতে ব্যবহৃত ইনপুট বিন্যাসসমূহের যোগফলকে ম্যাক্সটার্ম বলে। পতিটি ম্যাক্সটার্মের মান 0 হয়। সত্যক সারণীর যেসব ম্যাক্সটার্মের মান 0, সেই ম্যাক্সটার্মসমূহ গুণ করে বুলিয়ান ফাংশন/সমীকরণ নির্ণয় করা হয়। এ পদ্ধতিকে POS(Product of Sums) বলা হয়। নিচের সত্যক সারণী থেকে বুলিয়ান ফাংশন বের কর।
লজিক ফাংশন সরলীকরণ
বুলিয়ান ফাংশন বা লজিক ফাংশন লজিক গেইটের মাধ্যমে বাস্তবায়ন করার ক্ষেত্রে ফাংশনে লজিক অপারেটরের সংখ্যা কম থাকলে বাস্তবায়ন করার জন্য লজিক গেইটের সংখ্যা কম লাগে। ফলে বাস্তবায়ন সহজ হয় এবং অর্থ সাশ্রয়ী হয়। আর এ জন্যই বিভিন্ন বুলিয়ান উপপাদ্যের সাহায্যে বুলিয়ান ফাংশনগুলি সরলীকরণ করে ফাংশনে লজিক অপারেটরের সংখ্যা কম করা হয়। বুলিয়ান ফাংশন সরলীকরণ করার ক্ষেত্রে কতগুলি নিয়ম বা ক্রম মানতে হয়, যা নিম্নরুপ-
- নিয়ম-০১: প্রথম বন্ধনীর কাজ করতে হবে।
- নিয়ম-০২: NOT অপারেশনের কাজ অর্থাৎ সরাসরি উপপাদ্য প্রয়োগ করতে হবে।
- নিয়ম-০৩: AND অপারেশন অর্থাৎ গুণের কাজ করতে হবে।
- নিয়ম-০৪: কমন নিতে হবে এক্ষেত্রে শর্ত উপপাদ্য প্রয়োগ হতে হবে।
- নিয়ম-০৫: OR অপারেশন অর্থাৎ যোগের কাজ করতে হবে।
- সর্বশেষ যদি উপপাদ্য প্রয়োগ, NOT অপারেশন , AND অপারেশন, OR অপারেশনের কোন কাজ না হয় তাহলে বুঝতে হবে সরলীকরন আর করা যাবে না। অর্থাৎ এটাই কাঙ্খিত ফলাফল বা সরলীকরণ মান।
Note : উপপাদ্য প্রয়োগের ক্ষেত্রে সবসময় উপপাদ্যের বাম থেকে ডানে যেতে হবে শুধুমাত্র শেষ লাইনে উপপাদ্যের ডান থেকে বামে আসা যাবে।
Time's up
- 1
- 2