বই থেকে পড়
এনকোডার (Encoder)
যে ডিজিটাল বর্তনী মানুষের ভাষাকে কম্পিউটারের বোধগম্য ভাষায় রুপান্তর করে তাকে Encoder বলে। এটি আনকোডেড ডেটাকে কোডেড ডেটায় পরিণত করে।
⇒ এনকোডারে 2n সংখ্যক ইনপুট দিলে আউটপুট হবে n সংখ্যক।
এনকোডারের বৈশিষ্ট্য :
- সব ইনপুট একই সময়ে একই সাথে শূন্য (0) হতে পারে না।
- একটি ইনপুট 1 হলে বাকি ইনপুটগুলো শূন্য (0) হবে।
এনকোডারের ব্যবহার :
- বিভিন্ন ইনপুট ডিভাইসে ব্যবহৃত হয়। যেমন-কী-বোর্ড, মাউস, বিভিন্ন টেলিফোন সেট ইত্যাদি।
- দশমিক সংখ্যাকে বাইনারি সংখ্যায় এবং বিভিন্ন কোডে রুপান্তর করতে ব্যবহৃত হয়।
- আলফানিউমেরিক কোডকে ASCII ও EBDCIC কোডে রুপান্তর করতে ব্যবহৃত হয়।
- রোবট কন্ট্রোল করার ক্ষেত্রে এনকোডার ব্যবহৃত হয়।
ডিকোডার (Decoder)
যে ডিজিটাল বর্তনী কম্পিউটারের বোধগম্য ভাষাকে মানুষের ভাষায় রুপান্তর করে তাকে ডিকোডার বলে। এটি কোডেড ডেটাকে আনকোডেড ডেটায় পরিণত করে।
ডিকোডারের বৈশিষ্ট্য :
- সব আউটপুট একই সময়ে একই সাথে শূন্য (0) হতে পারে না।
- একটি আউটপুট 1 হলে বাকি আউটপুটগুলো শূন্য (0) হবে।
ডিকোডারের ব্যবহার :
- বিভিন্ন ধরনের ডিসপ্লেতে ব্যবহৃত হয়। যেমন-মনিটরে এবং ভিডিও কার্ডে।
- বাইনারি সংখ্যাকে সমতুল্য দশমিক সংখ্যায় রুপান্তর করে।
- ASCII ও EBDCIC কোডকে আলফানিউমেরিক কোডে রুপান্তর করতে ব্যবহৃত হয়।
- জটিল কোডকে সহজ কোডে রুপান্তর করতে ব্যবহৃত হয়।
- কম্পিউটারের ভাষাকে মানুষের ভাষায় রুপান্তর করতে ব্যবহৃত হয়।
এনকোডার ও ডিকোডারের পার্থক্য
এনকোডার | ডিকোডার |
১.যে ডিজিটাল বর্তনী মানুষের ভাষাকে কম্পিউটারের বোধগম্য ভাষায় রুপান্তর করে তাকে এনকোডার বলে। | ১.যে ডিজিটাল বর্তনী কম্পিউটারের বোধগম্য ভাষাকে মানুষের ভাষায় রুপান্তর করে তাকে ডিকোডার বলে। |
২.এনকোডারে 2n সংখ্যক ইনপুট দিলে আউটপুট হবে n সংখ্যক। | ২.ডিকোডারে n সংখ্যক ইনপুট দিলে আউটপুট হবে 2n সংখ্যক। |
৩.বিভিন্ন ইনপুট ডিভাইসে ব্যবহৃত হয়। | ৩.বিভিন্ন আউটপুট ডিভাইসে ব্যবহৃত হয়। |
৪.দশমিক সংখ্যাকে সমতুল্য বাইনারি সংখ্যায় রুপান্তর করে। | ৪.বাইনারি সংখ্যাকে সমতুল্য দশমিক সংখ্যায় রুপান্তর করে। |
৫.এনকোডার আনকোডেড ডেটাকে কোডেড ডেটায় পরিণত করে।
| ৫.ডিকোডার কোডেড ডেটাকে আনকোডেড ডেটায় পরিণত করে।
|
রেজিস্টার (Resister)
একগুচ্ছ ফিল্প-ফ্লপের সাহায্যে গঠিত ক্ষুদ্র অস্থায়ী মেমোরি ডিভাইসকে Resister বলে। রেজিস্টারে ব্যবহৃত প্রতিটি ফিল্প-ফ্লপ একটি করে বাইনারি বিট ধারণ করতে পারে। n বিটের একটি বাইনারি তথ্য ধারণের জন্য n সংখ্যক ফ্লিপ-ফ্লপ বিশিষ্ট একটি রেজিস্টার প্রয়োজন হয়। রেজিস্টার প্রথম মেমোরি ডিভাইস হিসেবে সিপিইউ এর ভিতরে থাকে এবং প্রসেসিং এর সময় অস্থায়ীভাবে ডেটা সঞ্চিত রাখে। যেমন-16 বিট রেজিস্টার 16 বিট তথ্য ধারণ করতে পারে, একইভাবে 32 বিট রেজিস্টার 32 বিট তথ্য ধারণ করতে পারে।
রেজিস্টারের প্রকারভেদ :
গঠন অনুসারে রেজিস্টার ২ ধরণের। যথা-
- বাফার বা প্যারালাল লোড রেজিস্টার
- শিফট রেজিস্টার (Shift Resister)
কাজের প্রকৃতির উপর ভিত্তি করে রেজিস্টার বিভিন্ন ধরণের হয়ে থাকে যেমন-
- অ্যাকুমুলেটর রেজিস্টার
- সাধারণ রেজিস্টার
- বিশেষ রেজিস্টার
বাফার বা প্যারালাল লোড রেজিস্টার :
বাফার বা প্যারালাল লোড রেজিস্টার হলো এমন এক ধরণের রেজিস্টার যা একসাথে অনেকগুলো বাইনারি বিট ধারণ করতে পারে এবং যেখানে একটি কমন ক্লক পালস সিস্টেম থাকে। কমন ক্লক ইনপুটে ক্লক পালস পওয়ার সাথে সাথে সবগুলো ফ্লিপ-ফ্লপ সক্রিয় হয় এবং তথ্য ধারণ করে। 4 বিটের একটি প্যারালাল লোড রেজিস্টার এর চিত্র নিচে দেওয়া হলো-
শিফট রেজিস্টার :
যে রেজিস্টার ধারণকৃত বিটকে ডান দিকে বা বাম দিকে বা উভয় দিকে সরাতে পারে তাকে শিফট রেজিস্টার বলে। শিফট রেজিস্টারের ফ্লিপ-ফ্লপগুলো চেইন আকারে একটির আউটপুট অন্যটির ইনপুটের সাথে সংযুক্ত থাকে। একটি কমন পালসের মাধ্যমে সকল ফ্লিপ-ফ্লপ ইনপুট গ্রহণ করে এক স্টেট হতে অন্য স্টেটে ডেটা শিফটিং করে। নিচে 4 বিট শিফট রেজিস্টার দেওয়া হলো-
রেজিস্টারের ব্যবহার :
- ক্যাশ মেমোরি হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
- বিভিন্ন ধরণের প্রিন্টার ও কী-বোর্ডের বাফারে ব্যবহুত হয়।
- ক্যালকুলেটর ও ডিজিটাল ঘড়িতে ব্যবহৃত হয়।
- সিপিইউ এর ভিতরে ক্ষণস্থায়ীভাবে ডেটা সঞ্চয় করতে ব্যবহৃত হয়।
কাউন্টার (Counter)
যে সিকুয়েন্সিয়াল ডিজিটাল ইলেক্ট্রনিক্স সার্কিট তার ইনপুটে দেওয়া পালসের সংখ্যা গুনতে পারে তাকে কাউন্টার বলে। কোন একটি কাউন্টার কতটি সংখ্যা গণনা করতে পারবে তা নির্ভর করে কাউন্টারের ডিজাইনের উপর।
n সংখ্যক বিট বিশিষ্ট একটি বাইনারি কাউন্টার 0 থেকে 2n-1 পর্যন্ত পর্যায়ক্রমিক সংখ্যা গুনতে পারে।
মডিউলাস বা মোড নম্বার : একটি কাউন্টার সর্বোচ্চ যত সংখ্যক সংখ্যা গণনা করতে পারে তাকে ঐ কাউন্টারের মোড নাম্বার বলে। n সংখ্যক ফ্লিপ-ফ্লপ এর সমন্বয়ে তৈরি একটি কাউন্টারের মডিউলাস বা মোড নাম্বার 2n ।
কাউন্টারের প্রকারভেদ :
ইনপুট ক্লক পালসের উপর ভিত্তি করে কাউন্টার প্রধাণত ২ প্রকার। যথা-
- সিনক্রেনাস কাউন্টার : যে কাউন্টারে একটি মাত্র ক্লক পালস কাউন্টারে ব্যবহৃত সবগুলো ফ্লিপ-ফ্লপ এর অবস্থার পরিবর্তন ঘটায় তাকে সিনক্রোনাস কাউন্টার বলে। যেমন-রিং কাউন্টার, মোড-10 ইত্যাদি।
- অ্যাসিনক্রোনাস কাউন্টার : যে কাউন্টারে একটি ফ্লিপ-ফ্লপের আউটপুট অন্যটির ক্লক পালস হিসেবে ব্যবহৃত হয় তাকে অ্যাসিনক্রোনাস কাউন্টার বলে। যেমন-রিপল কাউন্টার।
অ্যাসিনক্রোনাস কাউন্টার আবার দুই ধরনের-
১.রিপল আপ (ছোট থেকে বড় সংখ্যা গণনা করে) এবং
২. রিপল ডাউন ( বড় থেকে ছোট সংখ্যা গণনা করে)।
কাউন্টারের ব্যবহার :
- ডিজিটাল কম্পিউটারে ব্যবহৃত হয়।
- ডিজিটাল ঘড়িতে ব্যবহৃত হয়।
- ফ্রিকোয়েন্সি কাউন্টার তৈরিতে।
- এনালগ সিগনালকে ডিজিটাল সিগন্যালে রুপান্তর করতে।
- বিভিন্ন টাইমিং সিগন্যাল প্রদান করতে।
- ইভেন্ট গণনার কাজে ব্যবহৃত হয়।
- ডিজিটাল ইলেকট্রনিক্সের বিভিন্ন অপারেশন কন্ট্রোল করতে।
- বৈদ্যুতিক স্পন্দন গণনার কাজে।
- প্যারালাল ডেটাকে সিরিয়াল ডেটায় রুপান্তর করতে।